অনুদান দেয়ার নামে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে টাকা

অনুদান দেয়ার নামে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে টাকা

<![CDATA[

বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয়ে দেয়া হয় ফোন। বলা হয় অনুদানের টাকা বরাদ্দ হয়েছে। চাওয়া হয় ভিসা বা মাস্টারকার্ডের তথ্য। আর এভাবেই অনুদান দেয়ার নামে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রতারকচক্র। প্রতারণায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পেরেছে চক্রটি কল্যাণ বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে তালিকা ডাউনলোড করে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

পেশায় চিকিৎসক নাসরিন সুলতানা ২০২০ সালে সরকারি অনুদানের জন্য বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডে আবেদন করেছিলেন। ৪০ হাজার টাকা অনুদানও পেয়েছিলেন। চলতি বছরের পহেলা জুলাই বোর্ডের পরিচালক পরিচয়ে তার মোবাইলে ফোন আসে। বলা হয়, অনুদানের আরও কিছু টাকা তার নামে বরাদ্দ করা হয়েছে। তার ভিসা বা মাস্টারকার্ডের কিছু তথ্য চাওয়া হয়। তিনিও সব তথ্য দিয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গেই মোবাইলে খুদে বার্তা আসে তার প্রায় ৩০ হাজার টাকা কেটে নেয়া হয়েছে।

নাসরিন সুলতানা বলেন, ওটিপি বলার সঙ্গে সঙ্গেই আমার কাছে একটি মেসেজ আসে যে ৩০ হাজার ৮৮৮ টাকার কিছু ক্রয় করেছি বিকাশ থেকে। কিন্তু আমি তো কিছু ক্রয় করিনি। এ এসএমএস এলো কেন? পরে বুঝতে পারলাম যে প্রতারকরা টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।  

একইভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মহিবুল হাকিম।

তিনি বলেন, প্রতারকরা আমাকে প্রয়োজনীয় সব তথ্য দেয়। এতে আমি বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম। তারা আমার এটিএম কার্ড-পিনের তথ্য নিয়ে ওটিপি দিল। পরে দেখি, আমার প্রায় ৩০ হাজার টাকার মতো কেটে নিয়েছে।

আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে অপহরণকারী চক্রের ৭ সদস্য আটক

শতাধিক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে থেকে এভাবেই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারকচক্র। দেশের কয়েকটি জেলায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে চক্রটির ৫ সদস্যকে।

পুলিশ বলছে, কল্যাণ বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে অনুদানের তালিকা ডাউনলোড করে প্রতারকরা। তালিকায় থাকা মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হয় টার্গেট ব্যক্তিকে। কয়েকটি ধাপে মাত্র মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই ভিসা বা মাস্টাকার্ডের নম্বর, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ এবং মোবাইলে পাঠানো ওটিপির মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হয় টাকা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলন, ৬ মাসে তারা প্রায় ২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও গ্রাহকদের জন্য সতর্কতা বাড়াতে হবে। যে কেউ ফোনে চাইলেই আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য বিনিময় করবেন না।  

প্রতারণার বিষয়টি টের পাওয়ার পর গত জানুয়ারি থেকে অনুদানের কোনো তালিকা আপলোড করে না কল্যাণ বোর্ড। এমনকি সরিয়ে ফেলা হয়েছে আগের তালিকাও।

আরও পড়ুন: রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৪৬

বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের উপপরিচালক ফাতেমা তুজ জোহরা উপমা বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান কখনো কারও ওটিপি কিংবা পিন নম্বর জানতে চায় না।

এই ধরনের প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে কার্ডের নম্বর, পিন বা ওটিপি কারও সঙ্গে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ পুলিশের।

]]>

administrator

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.