মরুর বুকে সমুদ্রের শহর

HomeWorld

মরুর বুকে সমুদ্রের শহর

<![CDATA[ সাবাহ-আল-আহমাদ সিটি যেখানে সমুদ্রকে মরুভূমির কাছে নিয়ে আসা হয়েছে। কুয়েতের বিজনেস টাইকুন খালিদ আল মারজুকের স্বপ্ন ছিল একটি বড় মেগাসিটি অর

বিশ্বকাপের বিবেচনায় সৌম্য
৮ম বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ
বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান, বাড়ছে পানিবাহিত রোগ

<![CDATA[

সাবাহ-আল-আহমাদ সিটি যেখানে সমুদ্রকে মরুভূমির কাছে নিয়ে আসা হয়েছে। কুয়েতের বিজনেস টাইকুন খালিদ আল মারজুকের স্বপ্ন ছিল একটি বড় মেগাসিটি অর্থাৎ কুয়েতের মরুভূমির মাঝে একটি মানবসৃষ্ট সমুদ্রের শহর তৈরি করার, যেখানে ২৫০,০০০ মানুষের বাসস্থান হবে। আর প্রতিটি বাসিন্দার একটি লেগুনে নিজস্ব সৈকত অ্যাক্সেস থাকবে যা একদম সরাসরি সমুদ্রের দিকে নিয়ে যাবে।

আর তার এ স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে কাজ করে যাচ্ছেন ছেলে ফাওয়াজ খালিদ আল মারজুক। সাবাহ-আল-আহমাদ ‘সি’ সিটি, বর্তমানে ম্যানহ্যাটানের আকারের একটি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। কুয়েত মিডেল ইস্টের সবচেয়ে দামি এবং বিলাসবহুল শহর। সেখানকার জনসংখ্যা ৪২ লাখের কাছাকাছি। সেই হিসাবে প্রত্যেক বসবাসকারীর আছে পর্যাপ্ত অর্থ সম্পদ। তবে সমস্যা হলো কুয়েতের বেশিরভাগই জায়গা মরুভূমি।

যেখানে সাধারণ সুযোগ সুবিধা না থাকায় বসবাস করা কঠিন। সেই চিন্তা মাথায় রেখে খালিদ আল মারজুক একটি প্রাইভেট বিচে ভিলা তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেন। কিন্তু সেখানকার কোনো কোস্টলাইনে বা উপকূলবর্তী খালি জায়গা ছিল না এবং অন্য জায়গাগুলোতে কোনো না কোনো প্রজেক্ট চলছিল।

সৌদি আরবের বর্ডারের ১৫ কি.মি. আগে পারসিয়ান গালফে একটা ন্যাচারাল ক্রেক সিস্টেম ছিল। যেখানে সমুদ্রের ঢেউয়ের প্রেসারে, ক্রেকের ভেতর পানি অনেক গভীর পর্যন্ত যেতে পারতো। খালিদ আল মারজুক পরিকল্পনা করেন এই ন্যাচারাল ক্রেকগুলো ব্যবহার করে পুরো সিটি বানাবেন। নিজের মতো করে সেপ দিয়ে একটি পুরো সিটি তৈরি করবেন। তবে সমস্যা হলো ন্যাচারাল কোস্টলাইনকে পরিবর্তন করলে সেটা আগের রূপে ফিরে যাবে। তাই এত বড় মেগাসিটি তৈরির পেছনে দরকার ছিল একটা বড় মাস্টারপ্ল্যান। তাই প্রজেক্টে কাজ করতে ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ারদের পোহাতে হয়েছে নানান প্রকৌশলগত সমস্যা।

আরও পড়ুন: দুঃসাহসী অভিযাত্রী বিয়ার গ্রিলস

এই পুরো প্রকল্পে ২০টি দেশের ২,০০০ কর্মী জড়িত। কোন ক্রেক কোথা থেকে বের হবে, বাতাস আর পানির প্রেসার কতটুকু পড়বে সেগুলো মাথায় রেখে ক্রেকগুলো ডিজাইন করে পরিবর্তন করা হলো। তবে ১৯৯০ সালের দিকে কুয়েতে ইরাক হামলা করলে এই ‘সি’ মেগাপ্রজেক্টটি বন্ধ হয়ে যায়। কুয়েতের ৭০০-এর বেশি জায়গায় আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। পুরো পৃথিবীতে ১৫ দিন যত তেল ব্যবহার করা হয় ততটুকুই তেল কুয়েতে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। ১০ মাস পর্যন্ত ১৮০ কোটি ব্যারেলের ক্ষয়ক্ষতি হয় কুয়েতের। ২০০৪ সালে অবারও শুরু হলো মেগাপ্রজেক্ট ‘সি’ সিটির কাজ।

আরও পড়ুন: চিনি যেভাবে ব্রেইনের ক্ষতি করে

শুরু হয় খোদাইয়ের কাজ। তখন যেই সমস্যাটি ইঞ্জিনিয়ারদের সামনে এলো সেটি হলো জায়গাটিতে খুব নরম বালি ছিল যার ওপর কোনো বিল্ডিং তৈরি করা অসম্ভব। তখন তারা দীর্ঘ খোদাই করে সেই বালি তুলে পুনরায় বালি ভর্তির কাজটি করেন। আবার আর্টিফিশাল ক্রেকে যখন সমুদ্রের পানি দেয়া হবে তখন পানির প্রবাহ ন্যাচারালি পরিবর্তন না হলে সেক্ষেত্রে ফাঙ্গাস ধরার আশঙ্কা ছিল। ফলে দুর্গন্ধযুক্ত পানি হলে পুরো প্রজেক্টই নষ্ট হয়ে যেতো। তখন কম্পিউটারে সিমুলেশন টেস্ট করে পরবর্তী টাইডাল গেট লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। আর যেহেতু প্রজেক্টে ২৫০ কিলোমিটার নতুন বিচ তৈরি হবে সেক্ষেত্রে এত বিচের জন্য প্রচুর বালি দরকার ছিল। তখন সাধারণ মরুভূমির বালিকে প্রক্রিয়া করে তা থেকে মোটা আকৃতির পার্টিকেলগুলো বিচের জন্য ব্যবহার করা হলো।

কয়েক মাসের কাজের পর বিচের বালির রক্ষায় পাথরের ওয়ালও নির্মাণ করা হয়। তবে এ বিশাল মেগাসিটি তৈরির কেবল ৪টিই পর্ব তৈরি করা সম্ভব হয়েছে এখনও ৫ নম্বর ধাপ বা পর্ব বাকি আছে। প্রায় ৩২ বছর ধরে কুয়েত এ প্রজেক্টটি কমপ্লিট করার জন্য পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছে। প্রজেক্টটির লঞ্চ অনুষ্ঠানে সাবাহ আল আহমাদ নিজের নাম এ মেগাসিটির সাথে সংযুক্ত করেছিলেন। বর্তমানে এই মেগাসিটি সাবাহ-আল-আহমাদ সিটি নামে পরিচিত।

সূত্র: রিসার্চগেইট

]]>

Print Friendly, PDF & Email

COMMENTS

WORDPRESS: 0
DISQUS: