Business

রাজধানীতে শতকোটি টাকা নিয়ে উধাও আর্থিক প্রতিষ্ঠান

<![CDATA[

হাজারো গ্রাহকের শতকোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে আহমেদিয়া ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর মিরপুরে ভুক্তভোগীরা প্রতিষ্ঠানটির সামনে বিক্ষোভ করেন। তাদের অভিযোগ, দুই বছর ধরে নানা অজুহাতে গ্রাহকদের বিভিন্নভাবে প্রতারিত করে আসছেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক মনির আহমেদ।

শরবত বিক্রি করে একটু একটু করে ৫ বছর ধরে টাকা জমিয়েছেন আবদুল কুদ্দুস। কথা ছিল এই টাকা দিয়ে অনুষ্ঠান করে মেয়েকে পাঠাবেন শ্বশুরবাড়ি। তবে সেই স্বপ্নে আজ প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কায় উৎকণ্ঠা।

তিনি বলেন, গত জানুয়ারিতে আমার টাকাটা দেয়ার কথা ছিল। সেই হিসেবে আমি আমার মেয়েকে বিয়ে দিই। কিন্তু আমার টাকাটা এ পর্যন্ত দেয়নি। অফিসে এলে শুধু আজ না কাল, কাল পরশু; এ রকম করে হয়রানি করা হচ্ছে। এতে আমি আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি কিন্তু এখনো শ্বশুরবাড়িতে তুলে দিতে পারিনি।

এমন প্রতারণার ভুক্তভোগী শুধু আবদুল কুদ্দুস নন, এই ফাঁদে পড়ে কারও ভেঙেছে সংসার, আবার কেউ চিকিৎসা করাতে না পেরে হারিয়েছেন সন্তান। কেউ কেউ টাকা চাইতে এসে শিকার হয়েছেন মারধরেরও। তাই শেষ পর্যন্ত আহমেদিয়া ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্সের অফিসে টাকার দাবিতে অবস্থান নেন গ্রাহকরা।

এক ভুক্তভোগী বলেন, এখানে আমার ৬ লাখ টাকা আছে। এ টাকা চাইতে আসায় আমাকে কয়েকবার ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। আমাকে হুমকি দিয়ে বলা হয় যে আপনি কী করবেন? পারলে টাকা নেন, মালিকের কাছে যান, তাকে গিয়ে ধরেন!

আরও পড়ুন: অনুদান দেয়ার নামে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে টাকা

এক নারী বলেন, আমার স্বামী এই টাকার যন্ত্রণায় স্ট্রোক করে মারা গেছেন।  

আরেক ভুক্তভোগী বলেন, তারা এখন আহমেদিয়া ফাইন্যান্স থেকে টাকা ট্রান্সফার করে ইউরোস্টারে নিয়ে যাচ্ছে। এখন তারা বলছেন যে তারা বর্তমানে ফাইন্যান্সে চাকরি করেন না, ইউরোস্টার গ্রুপে চাকরি করেন। শুধু নামটা পরিবর্তন করেছে, কিন্তু মালিকসহ সবই এক। 

প্রায় ১৫ বছর ধরে দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক বিভিন্ন উপায়ে সঞ্চয়পত্র ও এফডিআরের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করত আহমেদিয়া ফাইন্যান্স আন্ড কমার্স। শুরুতে লভ্যাংশ ও মুনাফার কিছু টাকা গ্রাহকদের দেয়া হলেও ধীরেধীরে সুর পাল্টায় প্রতিষ্ঠানটির কর্তারা। এক হাজার ১০০ গ্রাহকের ৯৮ কোটি টাকা আটকে রেখে প্রতিষ্ঠানের মালিক মনির আহমেদ চালু করেন ইউরোস্টার গ্রুপ নামে নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

আহমেদিয়া ফাইন্যান্স অ্যান্ড কর্মাস এমসিএস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ৯৮ কোটি টাকার তালিকা আছে। এ ছাড়া ৩২ কোটি টাকা ফ্ল্যাটে সমন্বয় কর হয়েছে। এ সম্পদগুলো তাদের নিজস্ব। বাকি টাকাগুলোও সমন্বয় করার চেষ্টা চলছে। আর ছোটগুলো আগামী ডিসেম্বরে ক্লিয়ার করে এটা ক্লোজ করে দেয়া হবে।  

আরও পড়ুন: রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৪৬

এ ঘটনায় গ্রাহকরা বিভিন্ন সময়ে থানায় অভিযোগ জানালেও মামলা না করায় ব্যবস্থা নেয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, তারা বিভিন্ন সময় থানা গেছেন। আমি তাদেরকে সব সময় মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু তারা বলেছেন, মামরা করলে টাকা পাওয়া যাবে না। আর আমি তো আইনের বাইরে কোনো কথা বলতে পারি না। মামলা ছাড়া আমি তাদেরক ধরতেও পারি না।

এদিকে ইউরোস্টার গ্রুপের মালিক মনির আহমেদ বেশ কিছুদিন ধরেই লাপাত্তা বলছেন ভুক্তভোগীরা।

]]>

Print Friendly, PDF & Email
Related posts
Business

৮ম বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদ

<![CDATA[ স্বপ্নবাজ ও সংস্কৃতিমনা কিছু…
Read more
Business

লোকবল নেবে বাংলালিংক

<![CDATA[ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে…
Read more
Newsletter
Become a Trendsetter

Sign up for Amarhoster’s Daily Digest and get the best of Amarhoster, tailored for you.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *